লোকাল পত্রিকার সাংবাদিক কে ডিসির তিরস্কার মেঘনা নদীর একস্থানে ডিসির অনুমতি নিয়ে অন্যস্থানে ড্রেজারে অবাধে বালু উত্তোলন, হুমকিতে সড়ক ও রেলসেতুসহ সরকারি স্থাপনা দৈনিক লাল সবুজের দেশ দৈনিক লাল সবুজের দেশ প্রকাশিত: ৬:৩৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০২৫ এম.এ হালিম, বিশেষ প্রতিনিধিঃ একস্থানে ডিসির অনুমতি নিয়ে মেঘনা নদীর অন্যস্থানে গভীর নদীতে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চুম্বক ড্রেজারে বাল্কহেড নৌকায় অবাধে বালু উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। ফলে হুমকিতে রয়েছে নদীর তীরবর্তী বন্দরনগরী ভৈরব বাজারসহ মেঘনা নদীর উপর নির্মিত একটি সড়ক সেতু, দুটি রেলসেতু, তেলের ডিপো, বিএডিসি গোডাউন ও সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। মেঘনা নদীর আশুগঞ্জ প্রান্তে ফার্টিলাইজার এলাকায় চর কাটার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক কর্তৃক (নব্যসৃষ্টি করা ইজারা) বালুর উত্তোলনের অনুমতি দেয়া নিয়েও জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। ডিসির দেয়া বালু উত্তোলনের অনুমতিতে নাকি শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। একটি সূত্র জানিয়েছেন, জায়গার পরিমাপ, ড্রেজারের সংখ্যা নিয়ে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা মুখ না খোলায় এবং নানা ফাঁকফুকর থাকায় ইজারাদাররা অতিরিক্ত ড্রেজার ব্যবহার করে বালু উত্তোলন করায় সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। আনুমানিক দুই কোটি টাকার ইজারা নিয়ে ১লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলনের জন্য ডিসি অনুমতি দিলেও অতিরিক্ত ড্রেজার ব্যবহার করে নিদিষ্ট এরিয়ার বাহিরে নদীর বিভিন্নস্থান থেকে অন্তত পাঁচলাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন কারার টার্গেট নেমেছে একটি প্রভাবশালী মহল। তাছাড়া চর কাটার জন্য মুলত কাটিং ড্রেজার ব্যবহার করা হয়। ডেসপাচ জেটির এলাকার নদীর গভীরতা বাড়াতে কাটিং ড্রেজার ব্যবহার না করে লোড ড্রেজার ব্যবহার করলে ভবিৎষতে জেটি এলাকাই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে। এবিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিসি মোহাম্মদ দিদারুল আলম প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো সাংবাদিকদের সাথে ক্ষামতার দাপট দেখাচ্ছেন। অনুসন্ধানে জানাযায়, আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এন্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানার ওয়াটার ইনটেক ও ডেসপাচ জেটি এলাকায় বালুর সামান্য চর জাগায় ডেসপাচ জেটিতে পণ্যবাহী জাহাজ ভীরতে সমস্যা হওয়ায় ওই জায়গাটুকরু গভীরতা বাড়াতে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল, ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা বালুমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওইসভায় গৃহীত সিদ্ধান্তে আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এন্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানার ওয়াটার ইনটেক ও ডেসপাচ জেটি এলাকায় মেঘনা নদীতে বিআইডব্লিউএ কর্তৃক হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ (অপসন-১) অনুযায়ী ৯৪,৮০,৩১৫ (চুরান্নব্বই লক্ষ আশি হাজার তিনশত পনের) ঘনফুট মাটি/বালু উত্তোলনের অনুমোদন দেন মেসার্স কামাল ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর নুসরাত জাবীন স্বাক্ষরিত আদেশে বালু উত্তোলনের সরকারি মুল্য বাবদ ধরা হয় ১,৯৯,০৮,৬৬২/- (এক কোটি নিরানব্বই লক্ষ আটহাজার ছয়শত বাষট্রি) টাকা। ১৫ পর্সেন্ট ভ্যাট ও ১০পর্সেন্ট আয়করসহ মোট ২,৪৮,৮৫,৮২৯/- (দুই কোটি আটচল্লিশ লক্ষ পঁচাশি হাজার আটশত উনত্রিশ) টাকা ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধপূর্বক ৩০০/- (তিনশত) টাকার নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে চুক্তির নির্দেশ দেন। বালু উত্তোলনের অনুমোদনটি মুলত কোন স্থানে দেয়া হয়েছে, সার কারখানার ডেসপাচ জেটির কতটুকু অংশ কাটা হবে তার পরিমাপ এবং বালু উত্তোলনের জন্য কাটিং ড্রেজার নাকি শুধুমাত্র চুম্বক ড্রেজারের অনুমোদন দেয়াসহ এ সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে বিআইব্লিউটিএ’র আশুগঞ্জ-ভৈরব বাজার নদীবন্দরের উপ-পরিচালক, নৌ পুলিশ কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার, আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মেঘনা নদীর সারকারখানা এলাকায় বালু উত্তোলনের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডিসির অনুমতির একটি অস্পষ্ট চিঠি পেয়েছে বলে জানান। সড়ক ও জনপদ বিভাগের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মেঘনা নদী থেকে বালু যাবে এধরণের কজ দেখানো হয়েছে। ফলে ডিসির বাইরে কেই কথা বলতে চাচ্ছে না। কতটুকু এরিয়ায় বালু কাটা হবে। কাটিং ড্রেজার নাকি শুধুমাত্র চম্বুক ড্রেজারের বালু কাটার অনুমতি দিয়েছে ডিসি তার কোন কিছুই জানেন না তারা। অতএব সবকিছুই যেন ডিসির নিয়ন্ত্রণে। ডেসপাচ জেটির চর কাটার জন্য কি ধরণের শর্ত দেয়া হয়েছে ঠিকাদার ও ডিসির বাইরে কেউ অবগত না। ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিসি মোহাম্মদ দিদারুল আলমের স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন দেখো দিয়েছে। হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভের মাধ্যমে ডেসপাচ জেটি এলাকায় চর কাটার অনুমোদনের কথা বলা হলেও যথাযথ পক্রিয়া অনুসরণ করে ডিসি বালু উত্তোলনের অনুমোদন দিয়েছে কিনা তা নতুন করে তদন্তকরে জনসাধারণকে অবগত করার দাবি অভিজ্ঞ মহলের। ডেসপাচ জেটি এলাকায় মাটির অনুমতি নিয়ে ১০-১৫টি লোড ড্রেজার মেঘনা নদীর গভীরে ভৈরবপ্রান্তে এসে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে বন্দরনগর ভৈরব বাজার, ভৈরব আশুগঞ্জ মেঘনা নদীর উপর নির্মিত সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতু, হাবিলদার আবদুল আলিম রেলওসতু, জিল্লুর রহমান রেলসেতু, দুটি তেলের ডিপো ও বিএডিসির দুটি সারের গুদাম। মেঘনা নদীতে অবাধে লোড ড্রেজারে বালু উত্তোলনের ফলে চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি গভীর রাতে হঠাৎ মেঘনা নদীর ভৈরব বন্দর এলাকায় প্রবল নদী ভাঙনে প্রায় ২০০ ফুট মিটার জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এছাড়াও ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রাতে রেলসেতু সংলগ্ন তেলের ডিপোঘাট এলাকায় নদী ভাঙনের ফলে ১৮০ মিটার ভূমিসহ প্রায় ২০টি কাঁচা ঘর ও যমুনা অয়েল কোম্পানির একাংশ নদীতে তলিয়ে যায়। এর আগে ২০২২ সালে কাছাকাছি এলাকায় দুটি রাইস মিল নদীগর্ভে বিলীন হয়। এবং এই ঘটনায় দুইজন শ্রমিক প্রাণ হারান। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভৈরব বাজার কাঠপট্টি এলাকার কয়েকশ মিটারদূরে মেঘনার মাঝনদীতে ১০-১৫টি লোডিং ড্রেজারে বাল্কহেড নৌকায় বালু উত্তোলন করছে। সংবাদকর্মীদের দেখে বালু উত্তোলন বন্ধ করে ড্রেজার গুলো স্থানত্যাগ কওে আশুগঞ্জ সারকারখানা এলাকায় চলে য়ায়। তাদের সবার মুখে একটিই কথা, ডিসির অনুমতি নিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এবিষয়ে জানতে অনেক চে SHARES প্রচ্ছদ বিষয়: