সংস্কার, বিচার, নির্বাচন বনাম গণভোট। দৈনিক লাল সবুজের দেশ দৈনিক লাল সবুজের দেশ প্রকাশিত: ২:৪৪ অপরাহ্ণ, জুন ১২, ২০২৫ শাহিন আলম আশিক, মন্তব্য প্রতিবেদন। গণভোট একটি সমগ্র দেশ বা সার্বভৌমত্বের জনগণের দ্বারা কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যে, ভোট। যেমন : একজন শাসক বা সরকার নির্বাচন, স্বাধীনতা বা অন্য শক্তির সাথে সংযুক্তির বিকল্প শাসনব্যবস্থা বা প্রস্তাবের মধ্যে একটি বেছে নেওয়ার জন্য নয় বরং একটি নির্দিষ্ট ধরনের সরকার বা কর্মপন্থায় বৈধতা নিশ্চিত বা প্রত্যাখ্যান করার জন্য বলা হয়। গণভোট কে রাজনৈতিক দলগুলির মতো মধ্যস্তকারীদের এড়িয়ে সরকার কে সরাসরি জনগণের কাছে যাওয়ার একটি উপায় হিসেবে দেখা হয়। একটি আইন বা সংবিধানের পরিবর্তন,সংযোজন, বিয়োজন অথবা নতুন বন্দোবস্তের প্রত্যাশা পূরণে সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে গণভোট। পলাতক আওয়ামী সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতাসীন হবার পর,তাঁরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্হা বাতিল করে। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আওয়ামীলীগ পর,পর আরও তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জয় লাভ করে। ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনগুলোতে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠে। এর মাঝে ২০১৮ সালের নির্বাচন ব্যাতীত বাকী দুটো নির্বাচন, বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ বয়কট করেছিল। সেই সময় উন্মাদ আওয়ামী সরকার, বিরোধীদের উপর ব্যাপক নির্যাতন ও ধরপাকর চালায়।বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের রাজনৈতিক বিদ্বেষে বিভিন্ন মামলায় সাজা দেওয়ার মাধ্যমে, তাদের নেতৃত্বশূন্য করে ফেলা হয়।ও-ই সময়ে বাংলাদেশের সব গণমাধ্যমে তথ্য প্রচার কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর মতো কালো আইনের মাধ্যমে, কঠোরভাবে জনসাধারণের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। গত তিন মেয়াদে আওয়ামীলীগের ছোট থেকে কেন্দ্রের বেশির ভাগ নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠেছিল। বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থে কানাডায় বেগমপাড়া তৈরি করা হয়েছে। অব্যাহত দুর্নীতি ও লুটপাটে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি রেকর্ড, রিজার্ভের ঘাটতি, মানুষের জীবন যাত্রায় ব্যায় বৃদ্ধি ইত্যাদি শত কারণে দেশের মানুষ সরকারের উপর ক্ষুব্দ্ধ ছিল। গত বছরের পাঁচই জুন যখন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপণ বাতিল করে দেয়, সেদিন হাইকোর্টের সেই আদেশটি অনেক পত্রিকায় তেমন গুরুত্বও পায়নি। কিন্তু পরবর্তী পাঁচ সপ্তাহের মাথায় সেই বিক্ষোভের জেরে,, ১৬ বছর ধরে একটানা ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনাকে গোপনে দেশ ছেড়ে পলায়ন করতে হয়। আন্দোলন টি শুরুতে ছাত্রদের কোটা সংস্কার কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এর সাথে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নানা বয়সের লাখো মানুষ অংশ নিতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত এটা শুধু কোটা আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। এক পর্যায়ে দেশের সব স্তরের মানুষ আন্দোলনে অংশ নিয়েছে বা সমর্থন দিয়েছে। ভোটার বিহীন নির্বাচন,, ঘুষ,দুর্নীতি, চুরি বিপুল পরিমাণে অর্থ পাচার, ব্যাংকিংখাতে দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার, রিজার্ভের ঘাটতি, মূল্যস্ফীতি রেকর্ড, সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রায় ব্যয় বৃদ্ধি সহ সকলস্তরে দলীয়করণ সহ নানা কারণে, সাধারণ মানুষ সরকারের উপর খুবই বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ ছিল। মানুষ কোটা সংস্কার আন্দোলন কে ঘিরে নিজেদের ক্ষোভ,চাপা বেদনার প্রকাশ ঘটিয়েছে। বর্তমান অবস্থায় মানুষ বিশ্বাস করে, ড. মোহাম্মদ ইউনুস দেশ ও মানুষের স্বার্থে যে কোনো পদক্ষেপ নেবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার ও বিচার কার্যকর করে, শত,শত শহীদের আত্মত্যাগ স্বরণীয় করবেন। কোটি মানুষের চাওয়া গণভোটের আয়োজন করে জনতার চাওয়া প্রকাশের সুযোগ দেওয়া হোক। ভোটার বিহীন নির্বাচন বাতিল ব্যাবস্হা সহ, অব্যাহত দুর্নীতি ও লুটপাট প্রতিরোধে চাই নতুন বন্দোবস্ত / সংস্কার / অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার। কার্যকর করতে প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। SHARES প্রচ্ছদ বিষয়: