রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর অফিস।
আলু রাখার সংরক্ষণাগারের অভাবে কৃষকের এ বছর আলু আবাদের নিজস্ব চাহিদা ও ফলন চাহিদার চেয়ে বেশি হওয়ায় পড়েছেন বিপাকে। পাশাপাশি নেই দেশের বাইরে পাঠানোর সু-ব্যবস্থা। তাই সংরক্ষণের অভাবে রংপুরে পচে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার মেট্রিক টন আলু। আবার চাহিদার চেয়ে বেশি আবাদ হওয়ায় আলুর দাম না থাকায় বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছে তারা। ফলে আলু আবাদ করে এবার চরম বিপাকে পড়েছেন রংপুর অঞ্চলের কৃষকরা।
তারা বলছেন, আমরা আলু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। না পারছি ফেলে দিতে, না পারছি সংরক্ষণ করতে। কি করবো বুঝতে পারছি না। সরকার যদি মুখ তুলে তাকাতো তাহলে হয়তো বেচেঁ যেতাম।
এদিকে আলু প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কৃষি বিভাগ বলেন চলতি বছর রংপুর অঞ্চলে ১ লাখ ১ হাজার ৫৭৬ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। এতে উৎপাদন হয়েছে ৩২ লাখ ৩০ হাজার ৬৮২ মেট্রিক টন। এ বিভাগটি আলু প্রসঙ্গে আশার কথা শোনাতে না পারলেও জানান রপ্তানির চেষ্টা চলছে।
সরেজমিনে জানা যায়, এ বছর বাম্পার ফলন হওয়ায় আলু সংরক্ষণ করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন রংপুরের কৃষকরা। হিমাগারের স্থান সংকুলান না হওয়ায় কৃষকের বাড়িতেই আলু পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। হিমাগারে জায়গা না পাওয়ায় ঘরেই সংরক্ষণ করেছেন অনেকে। ফলে যথাযথ নিয়মে কম দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক। কৃষকের বাড়ির গোয়াল ঘর, বাড়ির উঠান, পুকুর পাড় সর্বত্রই আলুর স্তূপ। আলু দীর্ঘদিন থেকে পড়ে থাকার কারণে পচন ধরে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।
কৃষকরা জানান, অর্থ খরচ করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উৎপাদিত আলু এখন গলার কাটায় পরিণত হয়েছে। এর প্রতিকার কি?
এমন অবস্থায় কৃষকদের কোনো আশার কথাও শোনাতে না পারলেও বরাবরের মত দায়সারা উত্তর কৃষি বিভাগের। নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে কয়েকজন বলেন, আমরা কৃষকদের এবার আলু আবাদে নিরুৎসায়িত করেছিলাম কিন্তু তাদের থামাতে পারি নাই। কারণ গত বছরে আলুতে বেশি লাভ হওয়ায় এবার সকলে আলু চাষে মনোযোগ দিয়েছিলো। তাই সবাই এর ফল এখন ভোগ করছে।
জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, চলতি বছর রংপুর অঞ্চলে ১ লাখ ১ হাজার ৫৭৬ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। আর উৎপাদন হয়েছে ৩২ লাখ ৩০ হাজার ৬৮২ মেট্রিক টন। সংরক্ষণাগারের অভাবে কৃষকরা কিছুটা বিপাকে পড়েছেন।