কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের ভরা গ্রামের শাহজাহান মিয়া(৬৫) প্রতিপক্ষের হাতে নির্মম ভাবে হত্যার শিকার হন ৫বছর আগে।এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে ২ টি। নিহত শাহজাহানের ভাতিজা কাউসার মিয়া ১০১ জনকে আসামি করে মামলা করার পর তদন্ত কর্মকর্তা ৮৬ জনের নামে চার্জশীট দায়ের করেন আদালতে। এদিকে নিহত শাহজাহানের বিধবা স্ত্রী পাপিয়া আক্তারের দাবি প্রকৃত হত্যাকারীদেরকে আইনের আওতায় আনা হয়নি। ওই মামলার বাদী পরিকল্পিত ভাবে অপরাধীদেরকে আড়াল করে মামলাটি করেছিলেন। নিহত শাহজাহানের স্ত্রী পাপিয়া আক্তার তার স্বামীর বিচার চেয়ে ওই মামলার বাদী কাওসারসহ ১০৮ জনকে আসামী করে আরেকটি হত্যা মামরা করেছেন কিশোরগঞ্জ-৪ আমল গ্রহণকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।এ নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের ভরা গ্রামে বিগত ২০১৯ সালের ১৯ আগস্টের রাতে যাতায়াতের রাস্তাকে কেন্দ্র করে ফজলুর রহমানের সাথে বাদী কাউসার মিয়ার ভাই আক্তার মিয়ার কথা কাটাকাটি ও তর্ক বিতর্ক হয়। এর জের ধরে বিগত ২০১৯ সালের ২১ আগস্ট সকাল ৭টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে দাঙ্গা হাঙ্গামার সৃষ্টি হয়। ওই সময় দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত হয়ে শাজাহান মিয়ার( ৬৫) মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে নিহত শাহজাহানের ভাতিজা কাউসার মিয়া বাদী হয়ে মৃত আব্দুল মজিদ ভূইয়ার ছেলে আইয়ুব আলী ভূঁইয়া কে প্রধান আসামি করে ১০১জনের নামে একটি হত্যা মামলা করেন। মিঠামইন থানার মামলা নাম্বার ৪(৮)২০১৯। এ মামলায় সাক্ষীর তালিকায় রয়েছেন ১১ আহত জনের নাম। শাজাহান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই নজরুল ইসলাম২০২০ সালে ঘটনাটির তদন্ত শেষে আইয়ুব আলী ভূঁইয়া সহ ৮৬ জনের নামে চার্জশিট দায়ের করেন।
এদিকে ঘটনার পাঁচ বছর পর গত ৩ নভেম্বর তারিখে কিশোরগঞ্জ ৪ আমল গ্রহণকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিহত শাহজাহানের বিধবা স্ত্রী পাপিয়া আক্তার তার স্বামীর সুবিচার দাবি করে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। সি আর মামলা নাম্বার ৪৯০/২০২৪। পাপিয়া আক্তার আগের মামলার বাদী কাউসার মিয়া সহ ১০৮ জনের নামে মামলা করেছেন।পাপিয়ার দাবী আইয়ুব আলী ভূইয়া ঘটনার মূল অপরাধী না। ফলে তার নামের স্থলে অন্য জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তার এজাহারে । বিজ্ঞ আদালত নিহত শাহজাহানের স্ত্রী পাপিয়া আক্তারের এ অভিযোগটি আমলে নিয়ে পি ভি আই কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ প্রদান করেছেন।
বাদী পাপিয়া আক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান তার স্বামী শাহজাহানের সাথে বাড়ি ও জমি জামা নিয়ে পারিবারিক বিরোধ ছিল কাউসার মিয়ার সাথে। ঘটনার দিন নিহত শাহজাহানের ভিটেবাড়ি দখলকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। তখন ভাঙ্গা হাঙ্গামা শুরু হলে এই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে কাউসার । প্রকৃত হত্যার ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের নাম বাদ দিয়ে অহেতুক আইয়ুব আলী ভূঁইয়া সহ কয়েকজনকে মূল আসামি করে নিজের দোষ আড়াল করেছেন বলে পাপিয়া আক্তার দাবী করছেন । পাপিয়া আক্তার তার দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করেছেন ওই মামলার বাদী কাউসার মিয়া নিজেই তার স্বামীর হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত রয়েছে।বিধবা পাপিয়া আক্তার আরো জানান ঘটনার পর থেকে কাউসার মিয়ার হুমকির মুখে ও নজরবন্দিতে ছিলেন তিনি এবং ছেলে মেয়েরাও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কাউসার মিয়া হত্যা মামলা করার পর এজাহারভুক্ত আসামি আইয়ুব আলী ভূঁইয়া সহ ৯০ জন কারা ভোগ করেছেন। বর্তমানে ওই মামলাটি কিশোরগঞ্জ অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
এদিকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে কিশোরগঞ্জ পিবিআই এর সাব ইন্সপেক্টর খাইরুল বাশার ঘটনাটি তদন্তের জন্য মাঠে নেমে পড়েছেন। এই নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।