২৪ ফেব্রুয়ারী,এম এ হালিম, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ভৈরবে কালিকাপ্রসাদে মারামারি না করে ও মামলার আসামী হয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ভৈরব শাখার প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক শাহ আলম । শুধু তাই নয় মারামারিতে প্রতিপক্ষরা তার বসত ঘর সহ ৩টি ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে পরিবার ৩টি ।
এ ঘটনায় এলাকায় নিন্দার ঝড় বইছে । জানাযায়,ভাঙারীর জিনিষ চুরির ঘটনায় ২ পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত আহত হয়েছে ২০ । এ সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ভৈরব শাখারপ্রশিক্ষণ সম্পাদক শাহআলম মিয়ার বসতঘরসহ ৩টি বসত ঘর, জমি ও ইন্সুরেন্সের মূল্যবান কাগজ পত্র ও আসবাবপত্র আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে স্বর্ণালঙ্কার,নগদ টাকা-পয়সা লুটপাট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে ।
এ ঘটনায় উভয় পক্ষ ভৈরব থানায় পৃথক ২টি মামলা দায়ের করেছে । মামলা দায়েরের পর গ্রেফতার আতঙ্কে উভয় পক্ষের পুরুষ বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে । এদিকে শাহআলমের বাড়িসহ ৩টি বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়ায় বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ।
স্থানীয়রা জানায়, গত ১ বছর আগে ভাঙারী ব্যবসায়ী শরিফুলের দোকান থেকে ভাঙারীর মালামাল কেনা-বেচা নিয়ে ভুজার বাড়ির লোকদের সাথে ফুল মিয়ার বাড়ির লোকজনের মাঝে মারামরির ঘটনা ঘটে । পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সালিশী বৈঠকের মাধ্যমে শেষ হয় ।
কিন্ত এরই জের ধরে গত কয়েকদিন আগে ২ পক্ষের মাঝে সংঘর্ষের উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছে । এর মধ্যে গুরুতর আহত খোকা ও তৌফিক কে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।
সংঘর্ষে রোগী মারা যাওয়ার মিথ্যা গুজব খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ভুজার বাড়ির লোকজন ফুল মিয়ার বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ি-ঘর ভাংচুর ,লোটপাট করে আগুনে ৩টি বসত ঘর পুড়িয়ে দেয় ।
পরে ফায়ারসার্ভিস ঘটনাস্থলে পৗেছে ১ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হয় । এ বিষয়ে ফুল মিয়ার বাড়ির শাহ আলম জানান,সংঘর্ষের দিন আমি চর মোনাইর পীরের মাহফিলে ছিলাম । আমি সংঘর্ষের খবর পেয়ে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসার জন্য ভুজার বাড়ির শাহজাহান মিয়ার কাছে লোক পাঠাই ।
কিন্ত তিনি বিষয়টি মিমাংসা করার সুযোগ দেননি । পরে তারা আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে,নগদ প্রায় ৪ লাখ টাকা,স্বর্ণালঙ্কার খামারের ৪শ হাসঁসহ মূল্যবান জিনিষপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায় ।
এ সময় তারা আমার বসতঘরসহ আমার ভাই ও বোনের ৩টি বসত ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেয় । আগুনে বাড়ির জমি ও ইন্সুরেন্সের মূল্যবান কাগজপত্র পুড়ে তার ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে । শুধু তাই নয় তাকে ও প্রতিপক্ষরা মামলায় আসামী করেছে ।
এ ঘটনার তিনি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য সরকারের কাছে দাবী জানান ।।এ বিষয়ে শাহআলমের ভাই প্রবাসী বাদল মিয়া জানান,তিনি সংঘর্ষের কিছুই জানেননা । ঢাকা থেকে বাড়ি আসার পর পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায় । তাকে দেখতে তার স্ত্রী থানায় যায় ।
এ সময় বাড়িতে কেউ ছিলোনা । কিন্ত এ সুযোগে তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে সব নিয়ে গেছে ভুজার বাড়ির লোকজন ।এ বিষয়ে ভুজার বাড়ির মিজান ও মাসুদ রানা অভিযোগ অস্বীকারে জানান, ফুল মিয়ার বাড়ির লোকজন তার ভাই কে মেরে রেললাইনে ফেলে রেখেছে ।
এ খবর পেয়ে ওখানে গেলে তারা আমাকে ও আমার ভাইকে মারধোর করে আহত করে । পরে ২ পক্ষেরে মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয় ।
এ বিষয়ে কালিকাপ্রসাদ ইউপি সদস্য আবদুল্লাহ আল সেন্টু জানান, ঘটনার দিন শাহআলম সহ আমরা চর মোনাইর পীরের মাহফিলে ছিলাম । কিন্ত শাহআলমের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে তাকেই মামলার আসামী করা হয়েছে । তার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান ।
এ বিষয়ে কালিকা প্রসাদ ইউপি চেয়ারম্যান লিটন মিয়া জানান,পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ২ পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে । কিন্ত ১ বছর আগে ঘটনাটি মিমাংসা করা হয়েছিলো ।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ভৈরব শাখার সভাপতি মোঃ মুসা খান জানান, শমাহ আলম ঘটনার দিন চর মোনাইর মাহফিলে আমাদের সাথে ছিলো । তারপর ও তাকে মামলায় আসামী করা হয়েছে ।
তিনি মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়ে বলেন,মারামারি হতে পারে । তবে বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে নিয়ে যাবে আবার বসত ঘর আগুনে পুড়িয়ে দিবে । এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান তিনি ।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার ফুয়াদ রোহানী জানান,কালিকাপ্রসাদে ২ পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষ থেকে ২টি মামলা রুজু করা হয়েছে । তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে । শাহআলমেক আসামী করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, শাহআলম মারামারির সময় বাড়িতে ছিলোনা বলে জেনেছি । সে বিষটি ও তদন্ত করে দেখবো ।