নওগাঁ : খোরশেদ আলম

নওগাঁর মহাদেবপুরে গত ১৫/১২/২৪ ইং তারিখে রাতের আঁধারে ক্লুলেস খুনের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত তিনজন আসামিকে গ্রেফতর গ্রেফতার করেছে মহাদেব পুর থানা পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বিপিএম বলেন, মহাদেবপুর থানাধীন রাইগা ইউনিয়নের অন্তর্গত কালনা মৌযায় জনৈক আরমান সরদার এর জমির পাশে কালভার্টের নিচে হত্যাকারীরা পত্নীতলা থানার কোতালী গ্রামের মৃত অছিমুদ্দিনের ছেলে জাহিদুল ইসলামকে জবাই করে হত্যা করে ফেলে রেখে যায়। মৃতদেহটি একটি নীল পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ছিল।
এ নির্মম হত্যাকান্ডের বিষয়ে ভিকটিমের স্ত্রী মোছাঃ নাসিমা খাতুন (৩৭) বাদী হয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর মহাদেবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা রুজুর পরে,নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বিপিএম এর সরাসরি নির্দেশনায় মহাদেব পুর সার্কেল অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়ব্রত পাল এর নেতৃত্বে মহাদেব পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃহাসমত আলী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মোঃআসাদূজ্জামান সহ একটি পুলিশের চৌকস দল গুরুত্বের সাথে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু এই হত্যাকান্ডে কোন ধরনের কোন ক্লু না থাকার কারণে তদন্তকারী কর্মকর্তা কোন আসামি গ্রেফতার করতে পারছিলেন না। ফলে তদন্ত কাজে অত্যন্ত দক্ষ ও চৌকস কর্মকর্তা, মহাদেবপুর সার্কেল অফিসার জয়ব্রত পালের নেতৃত্বে নওগাঁ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রাতভর অভিযান চালিয়ে উক্ত টিম এ হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত তিনজন আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মামুনুর রশিদ (৩৬), পিতা গুলজার হোসেন, মোঃ রুবেল হোসেন (২৫), পিতা মৃত ইসমাইল হোসেন এবং মোহাম্মদ রাজু হাসান (৩২), পিতা- মৃত আবুল কালাম আজাদ। তারা সকলেই পত্নীতলা থানার ঘোষনগর ইউনিয়নের কোতালী গ্রামের বাসিন্দা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা এই নৃশংস হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করেছে। পূর্ব শত্রুতা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। এ হত্যাকান্ডের সাথে মোট পাঁচ জন জড়িত ছিল মর্মে জানা যায়।বাকি দূজন কে গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা চলছে।
হত্যাকান্ডের মোড় ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মৃতদেহটি পত্নীতলা থেকে একটি অটো চার্জার ভ্যানে করে মহাদেবপুরে এনে গুমের চেষ্টা করা হয়েছিল। এছড়াও আলামত ধ্বংসের উদ্দেশ্যে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি মহাদেবপুর থানাধীন চেরাগপুর ইউনিয়নের ধনজইল গ্রামের মাঠের মধ্যে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার পর আসামিরা ভিকটিমের লাশ উদ্ধারসহ দাফন কাফন কাজে সক্রিয়ভাবে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেছে যাতে তাদেরকে কেউ সন্দেহ না করে। উল্লেখ্য, মৃতদেহটি পত্নীতলা থেকে মহাদেবপুরে স্থানান্তরের কাজে ব্যবহৃত অটো চার্জার ভ্যানটিও উদ্ধার করা হয়েছে।